ফোন করলেই পৌঁছে যাচ্ছে বিনা ভাড়ার অ্যাম্বুলেন্স
কয়েক দিন ধরে প্রচণ্ড পেটব্যথায় ভুগছেন মো. ইমরান। সমস্যা বেড়ে যাওয়ায় স্থানীয় চিকিৎসকেরা এই তরুণকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেন। সোমবার রাতে নানাভাবে চেষ্টা করেও গাড়ি না পেয়ে সেখানে যেতে পারেননি। পরে ফেসবুকে পাওয়া একটি মুঠোফোন নম্বরে ফোন করেন। দ্রুতই অ্যাম্বুলেন্স চলে আসে। এরপরই ইমরান ওই হাসপাতালে গিয়ে ভর্তি হন। এ জন্য কোনো টাকা দিতে হয়নি।
করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে এখন ইমরানের মতো অনেক রোগী গাড়ির অভাবে হাসপাতালে পৌঁছাতে ভোগান্তিতে পড়ছেন। অনেকে আর্থিক সামর্থ্য না থাকায় অ্যাম্বুলেন্স জোগাড় করে জরুরি রোগী হাসপাতালে নিতে পারছেন না। এমন মানুষের সহযোগিতায় এগিয়ে এসেছে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া রাহাতিয়া দরবারের স্বেচ্ছাসেবক দল।
বিনা ভাড়ায় জরুরি রোগীদের পরিবহনের পাশাপাশি করোনাভাইরাসে মারা যাওয়া ব্যক্তিদের দাফন ও পরিবহনের জন্য ৩০ জনের এই দল কাজ করে যাচ্ছে। রাহাতিয়া দরবারের নির্দিষ্ট দুটি মুঠোফোন নম্বর দেওয়া হয়েছে। তাতে ফোন করলে তাৎক্ষণিক পৌঁছে যাচ্ছে অ্যাম্বুলেন্স। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে মুঠোফোন নম্বর দুটি ছড়িয়ে পড়েছে। সেখান থেকে নম্বর সংগ্রহ করে ফোন দিয়েই ইমরানের জন্য অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা হয়েছিল।
জানতে চাইলে রাহাতিয়া দরবারের সাজ্জাদানশীন (পীর) সৈয়্যদ ওবাইদুল মোস্তফা প্রথম আলোকে বলেন, মানুষের সেবা করা ইসলামের শিক্ষা। এই দরবারের বড় হুজুর সব সময় মানুষের সেবায় নিয়োজিত ছিলেন। কে কোন ধর্মের বিবেচনা না করে রাহাতিয়া দরবারের স্বেচ্ছাসেবক দল মানুষের সেবায় রোগী পরিবহন ও করোনায় মারা যাওয়া ব্যক্তিদের দাফনে সহযোগিতা করে যাবে।
উদ্যোক্তাদের মধ্যে রয়েছেন রাঙ্গুনিয়া সরকারি কলেজের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক আবদুল মাবুদ। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, করোনা পরিস্থিতির কারণে হাসপাতালে জরুরি রোগী নিতে অনেকেই গাড়ি না পেয়ে অসুবিধায় পড়ছেন। অনেকের আর্থিক সামর্থ্য না থাকায় রোগী হাসপাতালে নিতে পারছেন না । তাঁদের জন্যই এই অ্যাম্বুলেন্স সেবা। করোনা রোগীর লাশ দাফনে পরিবহনের জন্য আরেকটি গাড়ি প্রস্তুত করা হচ্ছে।