‘হেফাজতের কমিটি নয় এটি ফটিকছড়ি সমিতি’
হেফাজতে ইসলামের ঘোষিত কমিটিতে ফের আত্মীয়করণ ও দলীয়করণের অভিযোগ উঠেছে।সংগঠনটির পক্ষ থেকে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নেতাদের পদে না রাখার কথা বলা হলেও ঘোষিত নতুন কমিটিতে তার প্রতিফলন ঘটেনি। ঘোষিত কমিটিতে আমির জুনায়েদ বাবুনগরীর বিভিন্ন আত্মীয় রয়েছেন ১০ জন।
মাওলানা জুনায়েদ বাবুনগরী ও প্রধান উপদেষ্টা মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী হচ্ছেন আপন মামা-ভাগ্নে। নায়েবে আমির সালাউদ্দিন নানুপুরী, যুগ্ম-মহাসচিব আইয়ুব বাবুনগরী, সহকারী মহাসচিব জহুরুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক মীর ইদরিস ও মহাসচিব নুরুল ইসলাম জিহাদীও বাবুনগরীর আত্মীয়।
নতুন কমিটিতে রাজনীতিকদের মধ্যে আছেন—নায়েবে আমির আতাউল্লাহ হাফেজ্জি, যিনি খেলাফত আন্দোলনের আমির। যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আনোয়ারুল করিম, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সহ-সভাপতি পদে আছেন। দাওয়া বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা আবদুল কাইয়ুম সোবহানী হলেন খেলাফত মজলিসের নেতা।
সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা মীর ইদ্রিস খেলাফত আন্দোলনের নেতা। জামায়াতে ইসলামের কোনও পদে না থাকলেও হেফাজতের প্রচার সম্পাদক মাওলানা মুহিউদ্দীন রাব্বানী জামায়াতভিত্তিক ওলামা মাশায়েখ ও মসজিদ মিশন কেন্দ্রিক কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত। এছাড়া তিনি ইসলামী ব্যাংকের শরিয়া বোর্ডের সদস্য।
কওমি মাদ্রাসার আলেমরা বলছেন, নতুন কমিটি গঠনের নামে মূলত হাস্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হয়েছে। তাদের অভিযোগ—রাজনৈতিক নেতাদের পাশাপাশি কওমি শিক্ষায় যেসব গুরুত্বপূর্ণ বোর্ড আছে, ঘোষিত কমিটিতে এখন সেই বোর্ডের কর্তাদের সামনে আনা হয়েছে। এতে মাদ্রাসা শিক্ষার ওপরে প্রভাব পড়বে।
যদিও বর্তমান কমিটির নেতারা এসব অভিযোগকে আমলে নিতে রাজি নন। নাম প্রকাশ না করে কমিটির এক নেতা বলেন, সংগঠনের প্রতিষ্ঠাকালীন কমিটির গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা মাওলানা আনাস মাদানী ও মাওলানা মাঈনুদ্দিন রুহীসহ কয়েকজনের নাম নতুন কমিটিতে না থাকায় তারা ফের আজেবাজে কথা বলা শুরু করেছ। এটা তাদের পুরানো অভ্যাস।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে হেফাজতের প্রতিষ্ঠাকালীন যুগ্ম মহাসচিব মাঈনুদ্দিন রুহী সদ্য ঘোষিত কমিটিকে পুরান বউকে নতুন শাড়ি পড়ানোর মতো একটি কমিটি বলে আখ্যা দেন।
তিনি বলেন, বাবুনগরী পুরান কমিটির নেতাদের নিয়ে এদিক-ওদিক করে নতুন কমিটি করেছে। যে কমিটি হয়েছে তা জাতির সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে। আমি বলব, এটা পুরানো কমিটিই। আমি আগে বলেছি, এখনও বলছি, এটি একটি ফটিকছড়ি সমিতি।